তাজমহল ভ্রমন



তাজমহল

সম্রাটের ভালোবাসা বলে কথা! সে কি আর একটুতে হয়? মুঘল সম্রাট ভালোবাসার প্রকাশ এমনভাবেই ঘটিয়েছেন যা বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যে স্থান করে নিয়েছে। আর সেই প্রাসাদের মাঝখানে শুয়ে আছেন সম্রাটের ভালোবাসা। কখনো আর জাগবেন না তিনি।

তাজমহল তৈরীর ইতিহাসঃ

তাজমহলের ইতিহাস নিয়ে এখানে লেখাটা নিতান্তই অবান্তর৷ সবাই জানে এর পেছনের ইতিহাস। তাও দু এক লাইন লিখে ফরমালিটি পালন করা আর কি!

প্রাচীন মুঘল সম্রাট শাহজাহান তার স্ত্রী মমতাজ মহল মারা যাওয়ার পর শোকে কাতর হয়ে নির্দেশ দিয়েছিলেন এমন এক নিদর্শন তৈরী করার যা সারা পৃথিবী চির জীবন মনে রাখবে। তারই প্রেক্ষিতে দীর্ঘ সময়ের বিনিময়ে তৈরী হয় তাজমহল। 

এটি ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে কিছুটা দূরে আগ্রায় অবস্থিত। 

কিভাবে যাবেন?

যাক, এবার আসা যাক আসল পর্বে। তাজমহল দেখতে বের হলে আপনাকে প্রথমেই আসতে হবে দিল্লিতে। ঢাকা থেকে প্লেনে করে দিল্লিতে আসা যায়। তবে স্থলপথে দিল্লি আসলে খরচটা কমে যায়। সেক্ষেত্রে ঢাকা থেকে বেনাপোলের বাসে করে চলে যেতে পারেন বেনাপোল। তারপর বর্ডারের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ওপারে পৌঁছে সিএনজি অটোরিকশা করে বনগাঁ। সেখান থেকে রেলে করে কলকাতা। কলকাতা থেকে ট্রেনের টিকিট কেটে সোজা চলে যাবেন দিল্লিতে। পরের দিনটা দিল্লিতে রেস্ট নিয়ে তার পরদিন দিল্লি ঘুরে দেখতে পারেন। অথবা দিল্লি ঘোরার জন্য আরো ২-৩ দিন হাতে রাখতে পারেন৷ তারপর দিল্লি থেকে ট্রেনে বা বাসে করে চলে যাবেন আগ্রা। আগ্রাতে ডে ট্যুরও দেওয়া যায়। অর্থাৎ দিনে গিয়ে দিনেই ফিরে আসা যায়। তবে পূর্নিমার চাদের আলোয় তাজমহলকে অপূর্ব দেখায়। তাই এরকম কিছু একটা দেখার সুযোগ থাকলে সেটা হাতছাড়া করবেন না। আগ্রা ঘুরা শেষ করে আবার চলে আসবেন দিল্লিতে৷ যদি ডে ট্যুর দেন তাহলে দিল্লিতে এসে তার পরের দিন কলকাতার উদ্দ্যেশ্যে রওয়ানা হতে পারেন। আর একদিন থাকলে, যে দিন দিল্লি আসবেন সেই দিনই রাতের ট্রেনে উঠে পড়বেন। সারারাত জার্নি করে কলকাতা এসে এখানে একটা দিন কাটাতে পারেন। অথবা এই দিনই ফিরে আসতে পারেন বেনাপোলে। তারপর রাতের বাসে করে চলে আসবেন ঢাকা।    



দিল্লিতে কি কি দেখবেনঃ

যেহেতু দিল্লিতে দুএক দিন কাটাতে হবে তাই দিল্লি দেখার শখ মিটিয়ে আসবে অবশ্যই। দিল্লি সাইট সিইং এর শুরুটা করতে পারেন দিল্লির কুতুব মিনার দিয়ে। কুতুব মিনারে কিছুটা সময় কাটিয়ে চলে যাবেন হুমায়ুনের সমাধিসৌধে যা Humayun's Tomb নামে পরিচিত। এটিও দেখার মতো এক স্থাপত্য। সেখান থেকে চলে যাবেন দিল্লির আরেক পরিচিত যায়গা ইন্ডিয়া গেটে। দিল্লিতে আসলে এটা মিস দেওয়া উচিৎ না। সেখান থেকে দিল্লির বিশাল রাজপথে হেটে বেড়াতে পারেন। সন্ধ্যের পরে ছোটখাট একটা স্ট্রীট ফুড ট্যুরও দিয়ে দেখতে পারেন। 
দ্বিতীয় দিনের শুরুটা করতে পারেন লালকেল্লা দিয়ে। এটি আসলে একটা দূর্গ। এখানে অনেকটা সময় কাটাতে পারেন। সেখান থেকে চলে যাবেন রাষ্টপতি ভবন। ভারতের রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন এটি। এটি দেখা শেষ করে দিল্লি জামে মসজিদে চলে যাবেন। যেকোনো ধর্মের লোকের জন্যই এটি দেখার মতো একটি যায়গা। আর মুসলিম হলে তো নামাজটাই এখানে আদায় করে নিতে পারেন। তো সেখান থেকে চলে যাবেন দিল্লির ঐতিহ্য পুরান দিল্লিতে৷ অনেকটাই পুরান ঢাকার মতো ফিল পাবেন। বাকি দিনটা এখানে ওখানে ঢু মেরেই কাটিয়ে দিতে পারেন৷ তার পরের দিন সোজা আগ্রা।   







থাকার যায়গা ও লোকাল ট্রান্সপোর্ট 

দিল্লিতে থাকার জন্য যে কতো রকমের হোটেল আছে সেটা আশা করি বর্ণনা করে বুঝাতে হয় না। হাজার হলেও ভারতের রাজধানী বলে কথা! বুকিং.কম থেকে অনলাইনে হোটেল বুক করতে পারবেন। তাছাড়া পাহাড়গঞ্জ, রেড ফোর্ট, চাদনী চক এর কাছে সস্তা দামে হোটেল পেয়ে যাবেন।

লোকাল ট্রান্সপোর্ট হিসেবে দিল্লির মেট্রো ট্রেন ব্যবহার করতে পারলে সবথেকে বেস্ট ও সস্তা হয়। ভারতের সবথেকে ভালো মেট্রোরেলের মধ্যে দিল্লি রয়েছে। সবথেকে ভালো হবে দিল্লিতে নেমে Delhi Metro Rail App ডাউনলোড করে নেওয়া। তার ফলে আপনার আর আলাদা করে কোনো গাইড লাগবে না। এপ থেকেই সব তথ্য পেয়ে যাবেন।

খরচ

ঢাকা থেকে বেনাপোল পর্যন্ত বাস ভাড়া সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা নন এসি। বেনাপোল থেকে কলকাতা পর্যন্ত ট্রেনে গেলে খরচ হয় আরো ৫০ টাকা। কলকাতা থেকে ট্রেনে দিল্লি গেলে খরচ হয় ৭৫০ টাকার মতো। আর দিল্লি থেকে আগ্রা পর্যন্ত ট্রেন ভাড়া পরবে ২০০ টাকার মতো। তাজমহল দেখার এন্ট্রী ফিস ৬০০ টাকা। আর হোটেল ভাড়া প্রতিদিন ৬০০ টাকা (শেয়ার বেসিস) করে ধরলে সব মিলিয়ে (ঢাকা-কলকাতা-দিল্লি-আগ্রা-দিল্লি-কলকাতা-ঢাকা) খরচ পড়বে প্রায় ৭০০০ টাকার মতো। আরো ৫-৭ হাজার টাকা খাওয়া দাওয়া ও অন্যান্য খরচ ধরলে মোট ১৪০০০ টাকায় এই ট্যুর দেওয়া সম্ভব হবে। 

আরো পড়ুনঃ

 


Comments