ইন্দোনেশিয়ার বালি ভ্রমনের সম্পূর্ণ ট্যুরপ্লান


"পাহাড় আর সমুদ্র একসাথে দেখতে চান? তাহলে বালি চলে যান।" 

ইন্দোনেশিয়ার বালি আইল্যান্ড৷ পাহাড় আর সমুদ্রের এক অপূর্ব মিলবন্ধন। কথা হচ্ছে অসংখ্য দ্বীপ নিয়ে গঠিত ইন্দোনেশিয়ার অন্যতম একটা দ্বীপ বালি আইল্যান্ড নিয়ে। এমন কোনো ট্রাভেলার সত্যি খুঁজে পাওয়া কষ্টকর যে বালি যেতে ইচ্ছুক না। আর বাংলাদেশীদের জন্য এ তো এক স্বর্গ রাজ্য৷ বালি এমন এক যায়গা যেখানে আপনি একা গেলেও মজা করতে পারবেন, বন্ধুরা সবাই মিলে গেলেও মজা করতে পারবেন, আবার হানিমুনে যেতে হলেও বালির বিকল্প হয়না। মুলত বাংলাদেশীদের কাছে বালি পপুলার হয়ে উঠার মূল কারন হচ্ছে ৩ টি। 

১। বাংলাদেশীদের জন্য ভিসা লাগে না। শুধু পাসপোর্ট আর বিমানের রিটার্ন টিকেট থাকলেই চলে। 

২। ঘুরতে যাওয়া বলতে আমরা যা বুঝি অর্থাৎ পাহাড়, সমুদ্র আর ঝর্ণার ছড়াছড়ি বালিতে। এখানে আপনি যেমন সারাদিন সমুদ্রে কাটাতে পারেন ঠিক তেমনি সারাদিন পাহাড়ে মেঘ দেখেও কাটাতে পারেন। আবার শরীরের ক্লান্তি কাটানোর জন্য ঝর্ণাতে স্নানটাও সেরে নিতে পারেন। কোনো কিছুরই অভাব নেই সেখানে। সাথে বাড়তি পাওনা মন্দিরসহ অনেক প্রাচীন স্থাপনা ও স্থানভেদে পার্টি লাইফ। 

৩। বালিকে আমেরিকান ও ইউরোপিয়ানরা ডার্ট চিপ বলে থাকে। এখানে আপনি চাইলেই চোখের নিমিষে লাখ লাখ টাকা খরচ করতে পারবেন। কারন বালিতে ১০০ ডলার তাদের কারেন্সিতে চেঞ্জ করলেই আপনি পেয়ে যাবেন ১৫  লাখ+ ইন্দোনেশীয়ান রুপাইয়া। তবে মনে করবেন না ১৫ লাখ দিয়ে আপনি বাড়ি গাড়ি পেয়ে যাবেন। এক লিটার জলের জন্য খরচ হতে পারে ১০-১৫ হাজার রুপাইয়া। তবে ডার্ট চিপ হিসেবে খ্যাত হওয়ার কারণ কিন্তু আরেকটা। আপনি বাংলাদেশের একটা ৫ তারকা মানের হোটেলে থাকতে হলে আপনার মিনিমাম ১০ হাজার টাকা গুনা লাগতে পারে। কিন্তু বালিতে ৫ তারকা মানের হোটেলে থাকতে বাংলাদেশী টাকায় ৩৫০০ টাকার বেশী লাগার কথা না। বাংলাদেশের সাজেকেই একটা ভালো হোটেলের জন্য ৪০০০ টাকা লাগে। শুধু তাই নয়। আপনি যদি কখনও ইউরোপ আমেরিকা যান তাহলে দেখবেন বেচে থাকার জন্য মিনিমাম যে টাকা ব্যয় হয় তার পরিমানই কত বেশী। কিন্তু বালিতে আপনি মাত্র ৩০০-৪০০ টাকায় রাজার হালে এক বেলা খেতে পারবেন। বালির মতো একটা ফেমাস প্লেসে এই প্রাইস আসলেই চিপ। 
Indonesian Rupiah


কিভাবে যাবেন?

বাংলাদেশ থেকে বালির সরাসরি ফ্লাইট নেই। আপনার মালয়েশিয়া অথবা সিঙ্গাপুর হয়ে যেতে হবে। তবে প্যারা নিবেন না। তার জন্য আপনার মালয়েশিয়া অথবা সিঙ্গাপুরের ভিসা নিতে হবে না। শুধু বালির টিকিট কিনে প্লেনে উঠে পড়ুন আর মালয়েশিয়া অথবা সিঙ্গাপুরে যেয়ে তাদের ট্রানজিট এরিয়া তয়ে বালির ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষা করুন। সময় ভেদে প্লেন ভাড়া ২৫০০০ থেকে ৩০০০০ এর মতো পড়ে। এই প্রাইসে টিকিট কাটতে হলে আপনার এক মাস আগে টিকিট কাটতে পারেন। এই রুটে মালিন্দো এয়ার অনেক ভালো সার্ভিস দেয়। আর সম্ভব হলে ট্রানজিট টাইম ৪ ঘন্টা+ দেখে টিকিট কাটতে পারেন। এতে সম্পূর্ণ কুয়ালালামপুর এয়ারপোর্ট দেখে নিতে পারবেন। তাছড়া সিঙ্গাপুর হয়ে গেলেও দেখা পাবেন বিশ্বের সবথেকে বড় ইনডোর ওয়াটারফল এর যেটা সিঙ্গাপুরে অবস্থিত। মোটকথা দুটি এয়ারপোর্টই খুব সুন্দর।

দেখে নিন সস্তায় কিভাবে বিমানের টিকেট কাটবেন

কখন যাবেন? 

বালিতে মূলত দুইটা সিজন আছে। গ্রীষ্ম ও বর্ষা। এপ্রিল থেকে নভেম্বর হচ্ছে গ্রীষ্ম ও ডিসেম্বর থেকে মার্চ হচ্ছে বর্ষা। বর্ষাকালে মানুষজন কিছুটা কম থাকে। ফলে এই সময় সবকিছুর দাম কম থাকে। আর গ্রীষ্মকাল হচ্ছে আদর্শ সময়। এই সময় মানুষজন বেশী থাকে। মজাও বেশী হয়। তবে বাজেট ট্রাভেলার হলে এই দুই সিজনের মাঝামাঝি টাইমে যাওয়া ভালো। মানে এক সিজন শেষ ও আরেক সিজন শুরুর সময়। এতে মানুষজন ও মোটামোটি পাবেন ও খরচ ও তুলনামূলক ভাবে কম। তবে বালি বাংলাদেশের মতো না যে পিক সিজনে মাত্রাতিরিক্ত দাম আর অফ সিজনে একেবারে সস্তা। প্রাইজ খুব বেশী আপ ডাউন করে না। 

থাকার জায়গাঃ

বালিতে অসংখ্য হোটেল মোটেল, রিসোর্ট, হোস্টেল, হোম স্টে ইত্যাদি রয়েছে খুবই এফোর্ডেবল প্রাইসে। ৩০০ টাকার হোস্টেল থেকে শুরু করে ৮০০০ টাকার লাক্সারি স্যুইট পর্যন্ত রয়েছে। একা ভ্রমন করলে আমার মতে হোস্টেলে থাকা ভালো। এতে অসংখ্য নতুন বন্ধু পাওয়া যায়। বুকিং ডট কম, আগোডা ডট কম ইত্যাদি থেকে আপনি হোটেল বুক করে নিবেন। আর বুকিং কনফার্মেশন পেপার প্রিন্ট করে সাথে করে নিয়ে যাবেন। ইমিগ্রেশন দেখতে চাইতে পারে।

জেনে নিন ভ্রমনের সময় কিভাবে ফ্রিতে থাকা যায়?

কারেন্সি এক্সচেঞ্জঃ 

ইন্দোনেশিয়ার কারেন্সি হচ্ছে রুপাইয়া। বাংলাদেশের ১ টাকায় ১৬২ রুপাইয়া পাওয়া যায়। ইন্দোনেশিয়ায় টাকার হিসেব রাখাটা একটু ঝামেলার। একটা সংখ্যার পেছনে এতো বেশী শুন্য দেখবেন যে গোলমাল পাকিয়ে যাবে। তবে একটু ট্রিকস খাটিয়ে নিতে পারেন। সব নোটেরই শেষের ৩টা শুন্য মন থেকে বাদ দিয়ে দিবেন। তারপর যা থাকে তাকে ৫ দিয়ে গুন করে নিলে মুটামুটি বাংলাদেশি টাকার হিসেব পেয়ে যাবেন। যেমনঃ ১০০,০০০ টাকার নোটে পেছনের তিনটা শুন্য বাদ দিয়ে দিলে থাকে ১০০। এর সাথে ৫ গুন করলে হচ্ছে ৫০০। তার মানে হচ্ছে ১০০,০০০ রুপাইয়া সমান ৫০০ বাংলাদেশী টাকা। তবে লোকাল ইন্দোনেশিয়ান রাও শেষের ৩টা শুন্য বাদ দিয়ে হিসেব করে। যেমন তারা একটা জিনিষের দাম বলবে 60 Rupiah. এর মানে হচ্ছে ৬০,০০০ রুপাইয়া। এয়ারপোর্টে ডলার এক্সচেঞ্জ করবেন না। করলেও খুব সামান্য পরিমানে করবেন যাতে ট্যাক্সি ভাড়া মিটিয়ে দেওয়া যায়। অবশ্য ট্যাক্সি নিয়ে কুটাতে ঢোকার পর মানি এক্সচেঞ্জের দোকানের অভাব পাবেন না। অবশ্যই অথোরাইজড মানি এক্সচেঞ্জার থেকে মানি এক্সচেঞ্জ করবেন। কারন যেকোনো যায়গা থেকে টাকা ভাঙালে মারা খাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তারা আপনাকে লোভনীয় টাকা অফার করবে এবং টাকা দেওয়ার সময় একটা বান্ডিল গায়েব করে দিবে যা আপনি টেরও পাবেন না। ফলে বুঝে শুনে টাকা ভাঙাবেন। 

মোবাইল সিমঃ

এয়ারপোর্টে সিম (4 গিগাবাইট ডাটা, ফ্রি ইনকামিং কল, কিন্তু কোন আউটগোয়িং নাই 🤔) কিনলে আপনার পড়বে IDR 250,000। কিন্তু যদি আপনি কোনও রাস্তার পাশের দোকান থেকে একই সিম কিনে থাকেন তবে আপনার IDR 120,000 খরচ হবে। চয়েজ আপনার! বালি এমন একটি দেশ যেখানে একটি সিম এর মালিকানা আপনি পেতে পারেন কোন কাগজপত্র ছাড়াই !!! মানে no papers 😀


কি কি দেখবেন? 

কুটাঃ 


শুরু করা যাক বালি এয়ারপোর্ট দিয়ে। অসম্ভব সুন্দর একটি এয়ারপোর্ট। আপনি চাইলে এই এয়ারপোর্ট হেটেই ঘুরে দেখতে পারেন। তো, বালি বিমানবন্দর (Ngurah রাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর) আপনার এই দ্বীপে প্রধান এন্ট্রি পয়েন্ট। বিমানবন্দরটি তুবান এলাকায় অবস্থিত, কুটা এলাকা থেকে আনুমানিক ৩০ মিনিটের ড্রাইভ। যদি আপনার হাতে প্রচুর পরিমানে টাকা থাকে তাহলে এয়ারপোর্ট থেকেই ট্যাক্সি নিয়ে নিতে পারেন। এয়ারপোর্ট থেকে ট্যাক্সি নিতে প্রায় ৫০০,০০০ রুপাইয়া খরচ লাগতে পারে। আর টাকা কম থাকলে এয়ারপোর্ট থেকে বেড়িয়ে গিয়ে ট্যাক্সি নিবেন। ব্লু বার্ড ট্যাক্সি (নীল রঙ করা) নিতে পারেন। তারা মিটারে যায় ও এভাবে গেলে ভাড়া পরবে ১৫০-২০০,০০০ রুপাইয়া। আর একা গেলে গো জ্যাক এর বাইক ব্যবহার করতে পারেন। বাংলাদেশের পাঠাও এর মতো ভাড়া পরবে। খরচ হবে ৪০-৫০,০০০ রুপাইয়া। কুটাতে যেয়ে হোটেলে বিশ্রাম নেন। পরদিন কুটা বিচ এরিয়া ঘুরে দেখতে পারেন। কুটা বিচ এ আসলে দেখার মতো তেমন কিছু নাই। এখানকার আকর্ষণ হচ্ছে নাইট লাইফ। তাই আপনি নাইট লাইফ পছন্দ করলে ২-৩ দিন কুটা তে রিলাক্স করতে পারেন৷ Sky Garden Bali অনেক ফেমাস একটা বার। সেখানে যেতে পারেন।  তাছাড়াও আরো অনেক বার আছে। সেখানে ঘুরে দেখতে পারেন। বালিতে সব যায়গায়ই স্কুটার ভাড়া পাওয়া যায়। তাই স্কুটার ভাড়া নিয়ে নিবেন।

নুসা লেম্বগান (Nusa Lembongan):




এই দ্বীপটি নুসা পেনিদার পাশেই অবস্থিত। অনেক শান্ত একটা দ্বীপ।  নাইট লাইফ বলতে কিছুই নেই এখানে। রাত ৯ টা বাজলে সব শান্ত হয়ে যায়। মূলত যারা অতো কোলাহল পছন্দ করেন না আর একা থাকতে চান তারা এই দ্বীপে উঠতে পারেন। এখানে এসে পরে নুসা পেনিদার জন্য ডে ট্রিপের টিকেট কাটেন। নুসা লেম্বগান এ আসার জন্য অনেক ফাস্ট বোট আছে। আপনারা কোনো ভালো লোকাল এজেন্সি থেকে টিকেট কেটে নিবেন। কারন আলাদা ভাবে নিজে টিকেট কাটলে অনেক প্যারা খাওয়া লাগে। আর প্রাইস ও প্রায় সেমই। তাই এজেন্সি থেকে টিকেট কাটাই ভালো। টিকেট প্রাইস ২০০,০০০ রুপাইয়া পার পারসন ওয়ান ওয়ে। যদি গ্রুপ করে যান আর রিটার্ন টিকেট কাটেন  তাহলে আরো অনেক কম পরবে ভাড়া।

নুসা পেনিদা (Nusa Penida):

এই আইল্যান্ড অন্যতম সেরা একটা আইল্যান্ড। আমার মতে নুসা লেম্বগান এ না উঠে এখানে উঠাই ভালো। প্রথম কারনই হচ্ছে ভাড়া৷ আপনি কুটা থেকে নুসা পেনিদা ঘুরে আবার কুটা অথবা উবুদ এ ফিরে যাবেন। ভাড়া পরবে ৩০০,০০০ রুপাইয়া। (আপনার বার্গেনিং এর উপর ও অনেকটা নির্ভর করে)। এর মধ্যেই আপনি পাবেন হোটেল থেকে জেটি তে আসার গাড়ি, ফাস্ট বোট এর রিটার্ন টিকেট ও আবার জেটি থেকে হোটেলে যাওয়ার গাড়ি। নুসা পেনিদায় অনেক বিচ আছে। আপনি একটা হোটেলে থেকে সব গুলো বিচ ঘুরে দেখতে পারেন। হোটেলের জন্য আমার রিকমেন্ডেশন হচ্ছে Manta Cottage. বেষ্ট একটা কটেজ। তাছাড়াও অনেক হোস্টেল/হোস্টেল ও আছে। এখানেও স্কুটার ভাড়া পাওয়া যায়। নুসা পেনিদার জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট স্পটগুলো হচ্ছেঃ 
  • এঞ্জেলস বিলাবং
  • ব্রোকেন বিচ 
  • ডায়মন্ড বিচ
  • কেলিংকিং বিচ
  • আতুহ বিচ 
কেলিংকিং বিচ এ নামতে হলে শরীরে যথেষ্ট শক্তি থাকতে হবে ও পুরো একটা দিন বরাদ্দ রাখবেন এই বিচের জন্য। অথবা এমন ভাবে প্লান করবেন যাতে এই বিচ ঘুরা শেষ হলে সরাসরি হোটেলে চলে যাবেন। মানে আগেই সকালে ঘুরাঘুরি শেষ করে দুপুরে এই বিচে আসবেন। কারন এই বিচের নিচে নেমে আবার উপরে উঠলে আর কোনো যায়গায় ঘুরা লাগবে না। ১ লিটার স্যালাইন নিয়ে নিচে নামবেন। 
Kelingking Beach


Atuh Beach
Broken Beach
Manta Cottage



গিলি আইল্যান্ডস (Gili Islands)


নুসা পেনিদা থেকে সরাসরি চলে আসতে পারেন গিলিতে। আবার কুটা থেকেও আসতে পারেন গিলিতে। এই ৩টি আইল্যান্ড মূলত লম্বক এর অংশ হলেও বালিতে ঘুরতে যাওয়া ৮০ ভাগ ট্রাভেলারই গিলি আইল্যান্ডস এ ঘুরতে যান। গিলি আইল্যান্ডস ৩ টি আইল্যান্ড নিয়ে গঠিত। আপনার পছন্দ মতো একটাতে যেতে পারেন। নুসা পেনিদা অথবা কুটা উভয় যায়গা থেকেই টিকেট এর দাম পরবে ৩৭৫,০০০-৪০০,০০০ রুপাইয়ার মতো (রিটার্ন)। ৩ টি গিলি আইল্যান্ড এর আলাদা আলাদা ৩ টি বৈশিষ্ট্য আছে।

গিলি ত্রাওয়াংগান (Gili Trawangan):

আপনি যদি পার্টি লাভার হোন তাহলে এই আইল্যান্ড আপনার জন্য স্বর্গ। সারা রাত পার্টি আর আড্ডা হয় এখানে। পুরোই ইউরোপীয় স্টাইল। নাইট লাইফের জন্য বেষ্ট। মানে পুরোই হিপ হপ একটা যায়গা। যদি এই আইল্যান্ডে থাকার ইচ্ছা থাকে তাহলে অবশ্যই Jiggi Boat Party এর টিকেট কেটে একটা দিন কাটাবেন। হোস্টেল রিকমেন্ডেশন রইলো La Favela.
La Favela Hostel
Jiggi Boat Party

গিলি মেনো (Gili Meno): 

এটা একটা হানিমুন স্পট। এখানে কাপলরাই বেশি যায়। তাই আপনি একা ভ্রমন করলে এই আইল্যান্ড তালিকা থেকে বাদ দিতে পারেন।

গিলি এয়ার (Gili Air):

এটা হচ্ছে শান্ত আইল্যান্ড৷ তেমন ভিড় নেই৷ নেহাতই শান্তিপ্রিয় মানুষ হলে এখানে আসতে পারেন। আবার গিলি ত্রাওয়াংগানে থেকে এখানে ডে ট্রিপে আসতে পারেন। 

গিলি আইল্যান্ড এর জন্য আপনার ৫ রাত হাতে রাখা ভালো। কারন অন্য আইল্যান্ড এর কথা জানি না কিন্তু  আপনি যদি Gili Trawangan এ যান তাহলে আপনার আসতেই মন চাইবে না। তাই পুরো বালি ট্যুরের হিউজ একটা টাইম বরাদ্দ রাখবেন এই গিলি আইল্যান্ড এর জন্য। আর অবশ্যই Gili Nest Sculpture এ স্কুভা ডাইভিং এ যাবেন। এটা গিলি মেনোতে অবস্থিত তবে যেকোনো গিলি আইল্যান্ড থেকেই ডে ট্যুরে সেখানে যাওয়া যায়।
Nest Sculpture 

উবুদঃ

উবুদ হচ্ছে পাহাড়ি এলাকা। এখানেই বালির সব ঝর্ণা অবস্থিত৷ তাছাড়াও আছে  আগ্নেয়গিরি ও মন্দির। উবুদে গেলে অবশ্যই মাউন্ট বাতুর ট্রেক এ যাবেন। রাতে আপনাকে হোটেল থেকে নিয়ে যাবে ও সূর্য উঠার আগে পাহাড়ে নিয়ে উঠবে। সেখান থেকে অনেকটা এই রকম দৃশ্য পাবেন।
উবুদে গেলে এইরকম অসংখ্য ঝরনার দেখা পাবেন

ট্রিপ এর খরচ পড়বে ৩০০,০০০ পার পারসন। তাছাড়া গাড়ি ভাড়া করে সারাদিন ঘুরে বেড়াতে পারেন। নাহলে গরীবের বন্ধু স্কুটার তো আছেই। তবে উবুদে খুব বেশি বৃষ্টি হয়। তাই অবশ্যই ছাতা নিয়ে যাবেন ( স্কুটার চালালে রেনকোর্ট) নিয়ে যাবেন। উবুদ থেকে যে দিন ফিরবেন সেদিন কুটাতে থেকে পরদিনই ফ্লাইট ধরতে পারেন অথবা আরো একদিন থাকতে পারেন। এভাবেই আপনার বালি ট্রিপের প্লান করে ফেলতে পারেন।


  • ওয়াটার স্পোর্টস এর জন্য গিলি আইল্যান্ড বেষ্ট।
  • বালিতে গেলে লুয়াক কফি টেস্ট করবেন। ( The most expensive coffee in the world)
  • দেশে ফেরার সময় চকোলেট কিতে হলে বালি থেকেই কিনে নিবেন। বালির এয়াপোর্টে ডিউটি ফ্রি শপ এ দাম অনেক বেশি।
  • এলকোহল এর অভ্যাস থাকলে মালেয়শিয়া ডিউটি ফ্রি শপ থেকে কিনে নিবেন। বালিতে এলকোহল এর উপর ট্যাক্স অনেক বেশি তাই দাম ও অনেক বেশি। তবে ১ লিটারের উপর এলকোহল বহন করা যায় না।
  • Bar অথবা pub এ এন্ট্রি টিকিটের সাথে ফ্রি আনলিমিটেড ড্রিংকস। তাই বলে এটা মাথায় রাখবেন যে হোটেল পর্যন্ত আপনারই যেতে হবে। বারের লোক আপনাকে হোটেলে পৌঁছে দিবে না। আর ভূলেও প্রো লেভেল না হলে বালির লোকাল মদে হাত দিয়েন না।
  •  ট্রাভেল এডপ্টার নিয়ে যাবেন। ইন্দোনেশিয়ায় এর দাম অনেক বেশি। 


আরো পড়ুনঃ
শিমলা- মানালি ট্যুর প্লানঃ কিভাবে যাবেন, খরচাপাতি সহ সব
সাজেক ভ্রমন গাইড - কিভাবে যাবেন? কোথায় থাকবেন?
থাইল্যান্ড ট্যুর প্লান




Comments