সস্তায় ভ্রমন টিপসঃ
ভ্রমন আমাদের রক্তের সাথে মিশে আছে। কোনো নতুন যায়গায় যাওয়া, সেখানের নতুনত্বের সাথে মানিয়ে চলা, পরিচিত হওয়া প্রত্যেক মানুষেরই ইচ্ছার মধ্যে পড়ে। কিন্তু তা পূরন করতে পারে কয়জন? বেশিরভাগই নিজের জীবন বলতে যা বোঝেন তা হলো একটা ভালো চাকুরী, বিয়ে, সন্তান। তারপর সন্তান বড় হলে তাদের নিয়ে ছোটোখাট একটা ট্যুর। কিন্তু কিছু মানুষের রক্তেই থাকে ভ্রমনের নেশা। তবে যখন পকেটে টাকা থাকে না তখন সেই নেশা মেটানো অনেকটাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। কিন্তু একটু ট্রিকস করে চলতে পারলেই খরচ অনেকটা কমিয়ে নিজের সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসা যায়। এটা নিয়েই আজকের আলোচনা।
ট্যুর এজেন্সি এড়িয়ে চলুন।
আমরা প্রায়সই যেকোনো কাজই সহজে করার জন্য ট্যুর অপারেটর দের সাহায্য নিয়ে থাকি। ফলে তাদের পেছনেই আমাদের অনেক টাকা চলে যায়। যেমন আপনি একটি হোটেল বুক করলেন ১০০০ টাকা দিয়ে। কিন্তু তাদের কাছে গেলে তারা ঐ হোটেলই বুক করে দিবে ১২০০ টাকায়। এখানে ২০০ টাকা তাদের কমিশন। সেম অবস্থা বিমানের টিকিটের ক্ষেত্রেও। তাই যতটা সম্ভব তাদের এড়িয়ে চলুন।
প্রথমেই একটি খসড়া পরিকল্পনা করুন।
আপনি ভ্রমনে গিয়ে কোথায় কত দিন থাকবেন, কি খাবেন, কিভাবে যাবেন তা আগেই ঠিক করে নিন। এবার এই প্লান টাকেই কাটছাট করে মনের মতো করে নিন। নতুন যায়গা সম্পর্কে জানার জন্য গুগল এর সাহায্য নিন। তাছাড়া www.tripadvisor.com এ গিয়েও আপনি অনেক তথ্য পেতে পারেন। ফলে আগেই প্লান থাকলে আপনার অনেক খরচ কমবে।
আরো পড়ুনঃ
১/ কক্সবাজার সেন্টমার্টিন ট্যুর প্লান
২/ গরমের ছুটিতে ঘুরে আসুন গোয়া
নিজের টিকিট/ হোটেল নিজেই আগে বুকিং করুন।
আপনি যদি নিজের হোটেল অথবা আর যা কিছু আগে থেকে বুকিং করতে হয় তাহলে তা নিজেই বুকিং করে রাখুন। এতে অনেক টাকা সেভ হয়। আপনি নিজের বিমানের টিকিট নিজে কাটলে আপনার কোনো এজেন্সিকে টাকা দিতে হচ্ছে না। বিমানের টিকেট সস্তায় কাটার জন্য এই লেখাটি পড়তে পারেন। যেমন আপনি ভারতের যেকোন বাস, ট্রেন, হোটেল, প্রায় সব যায়গার ইনফরমেশন + যেকোন এক্টিভিটি টিকেট Make My Trip থেকে পেতে পারেন। এভাবে আপনি সহজেই সেখান সম্পর্কে ধারনা ও টিকিট পেতে পারেন। এতে আপনার স্পটে গিয়ে কষ্ট করে টিকিট খুজতে হবে না।ভ্রমনের তারিখের ব্যাপারে নমনীয় হোন।
ধরুন আপনি মনে মনে ঠিক করলেন আপনি কোনো এক মাসের ১২ তারিখ ভ্রমন করবেন। কিন্তু আপনি হয়তো জানেন ও না যে ঠিক এর ২ দিন পরে গেলে আপনার বিমান ভাড়া অর্ধেক লাগতো। কিন্তু আপনি আগেই যদি skyscanner এ গিয়ে আপনার ভ্রমন তারিখ লিখে সার্চ দিতেন তাহলে ঐ মাসের কোন দিন কেমন ভাড়া তা জানতে পারতেন। তাই এই দিকে খেয়াল রাখবেন।হোটেল বুকিং সম্পর্কে সচেতন হোন।
আপনি কি জানেন যে ৫ তারকা হোটেল গুলোতে আপনি বাথরুমে যে শ্যাম্পু ব্যাবহার করেন তার জন্যও বিল ধরিয়ে দেওয়া হয়? তাই ফেসবুকে একটা চেক ইন দেওয়ার জন্য অযথা ৫ তারকা না খুজে কম দামে ভালো মানের হোটেল খুজুন। কারন বেনামী একটা হোটেলে অসময়ে একজন কাস্টমার একটা স্বর্ণ হয়ে হোটেল মালিকদের কাছে দেখা দেয়। তাই এর পুরো ব্যবহার করুন।সবসময় একটা গ্রুপ হয়ে ট্যুরে যান।
ট্যুরের সবচেয়ে ভালো খরচ কমানোর উপায় হচ্ছে গ্রুপ ট্যুর দেওয়া। আপনি যদি একা একটা ৩ স্টার মানের হোটেল রুম বুক করেন তাহলে আপনার যা খরচ পড়বে তার থেকে কিছু টাকা বেশি দিয়ে আপনি অনায়াসে একটা এপার্টমেন্টে থাকতে পরবেন। ফলে এইখানেই আপনার খরচ ৩/২ ভাগ কমে যাবে। তাছাড়া আপনি খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে লোকাল ট্রান্সপোর্টেও কমাতে পারবেন। যেমন আমি কক্সবাজারে গিয়ে একটা স্কুটি বুক করি। এতে আমার তেল সহ খরচ হয় প্রায় ৮০০ টাকার মতো। কিন্তু একটা স্কুটিতে অনায়াসে ২ জন যাতায়াত করা যায়। ফলে ২ জন হলে খরচটা ভাগ হয়ে যায়।আরো পড়ুনঃ
১/ কক্সবাজার সেন্টমার্টিন ট্যুর প্লান
২/ গরমের ছুটিতে ঘুরে আসুন গোয়া
শুকনো খাবার ও পানি সাথে রাখুন
ভ্রমনের সময় শুকনো খাবার যেমন কেক, চিপস, কোকাকোলা ইত্যাদি কিনে সাথে রাখবেন। এতে স্থানীয়দের লাগামছাড়া দামের হাত থেকে বেচে যাবেন।
স্ট্রীট ও লোকাল ফুড ট্রাই করবেন
বাংলাদেশে যেমন চায়নিজ রেস্ট্রুরেন্টে প্রচুর দাম রাখে তেমনি চায়নাতে গেলে দেখবেন ভারতীয় রেস্ট্রুরেন্টে প্রচুর দাম রাখবে। তাই সবসময় লোকাল ফুড খাবেন। আবার একটা দামী রেস্তুরাতে খাওয়ার থেকে ভালোমানের স্ট্রীটফুডের দাম কম হয়।
রাতে ভ্রমন করুন।
মনে করেন আপনি সিলেট বেড়াতে গেছেন। তো ঢাকা থেকে সিলেটে রাতে যাওয়া যায়। আবার দিনেও যাওয়া যায়। কিন্তু আপনি রাতে গেলে আপনার ঐ রাতের হোটেল ভাড়া বেচে যাবে যা দিনের বেলায় গেলে সম্ভব ছিলো না। তাই চেষ্টা করবেন রাতে ভ্রমনের।
Comments
Post a Comment