ইবিএল আকুয়া কার্ডের A টু Z



বর্তমান দিনে একটি ক্রেডিট কার্ড সবার জন্য প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু দেশের ভেতর ক্রেডিট কার্ড পাওয়া অনেক কষ্টকর। তাছাড়া অনেক Hidden Charge এর যন্ত্রনায় কার্ড নেওয়ার ইচ্ছা চলে যায়। ভালো আয় ছাড়া প্রায় কোনো ব্যাংকই ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে না। কিন্তু প্রায় প্রতিটি অনলাইনে শপিং এর জন্যই ক্রেডিট কার্ডের প্রয়োজন। এজন্য সবচাইতে ভালো উপায় হচ্ছে এবিএল এর আকুয়া মাস্টারকার্ড। এটি একটি প্রি-পেইড মাস্টার কার্ড। অনলাইন শপিং ছাড়াও এটা দিয়ে ডলার লোড করে বিশ্বের যেকোনো দেশে টাকা নিয়ে যাওয়া যায়। তাছাড়া এর খরচ ও যথেষ্ট কম। ৩ বছরে ৫৭৫ টাকা ভ্যাট সহ। তাই আর দেরী না করে নিয়ে নিতে পারেন ইবিএল আকুয়া মাস্টারকার্ড।

একটি আকুয়া মাস্টারকার্ডের জন্য যা যা প্রয়োজন
  • ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
  • ৫৭৫ টাকা ৩ বছরের জন্য।
  • ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি
  • USD ব্যাবহার এর জন্য পাসপোর্ট এর প্রয়োজন হবে। ( পাসপোর্ট ছাড়া আপনি শুধু বাংলাদেশের কারেন্সী ব্যাবহার করতে পারবেন। USD কারেন্সির জন্য পাসপোর্ট নিয়ে গেলে তারা এন্ড্রুসমেন্ট করে দিবে
  • (আমি কিছুদিন আগেই একটা কার্ড নিই (১৬-০৩-২০২০)। আমি যেহেতু স্টুডেন্ট তাই আমাকে আমার বাবার ট্রেড লাইসেন্স এর ফটোকপি জমা দিতে হয়েছে। তাই আপনার আর্নিং সোর্স এর কাগজ সাথে নিয়ে যাবেন)   

আকুয়া কার্ডের সুবিধা

  • এই কার্ড দিয়ে আপনি ডুয়েল কারেন্সি (BDT, USD) ব্যাবহার করতে পারবেন।
  • কার্ডটির ফি ৫৭৫ টাকা। বছরে বছরে কোনো ফি নেই৷ ৩ বছর পর আবার ৫৭৫ টাকা দিয়ে রিনিউ করতে পারবেন।
  • প্রতিটি লেনদেনে আপনাকে এসএমএস দিয়ে এলার্ট করবে
  • দেশে বিদেশে যেকোনো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হতে পন্য/সেবা ক্রয় করতে পারবেন।
  • ডলার লোডের সময় কোনো ফি নেই।
  • বিদেশের এটিএম থেকে টাকা তুলার সময় ১% অথবা ২(যেটি বেশী হয়) ডলার চার্জ কাটবে। ধরুন আপনি ১০০ ডলার তুললেন। ১০০ ডলারের ১% ২ ডলার হতে কম। তাই  ২ ডলার কাটবে। আবার আপনি যদি ২০০ ডলারের উপরে উত্তোলন করেন তখন  ১% করে কাটবে। ভ্যাট সহ ২.৮৮ ডলার। তাছাড়া ঐ দেশের এটিএম প্রোভাইডার ব্যাংক ও একটা চার্জ কাটবে।
  • বাংলাদেশের কোনো এটিএম থেকে আপনি ডলার তুলতে পারবেন না। আপনার কার্ডের বিডিটি পার্টে টাকা থাকতে হবে। যদি ডলার থাকে, তাহলে স্কাইব্যাংকিং এপ্স দিয়ে আগে ডলারকে বিডিটি করে নিতে হবে। তারপর যেকোনো এটিএম থেকে টাকা তুলতে পারবেন। ইবিএল এর এটিএম এ উত্তোলন চার্জ ফ্রী। অন্যান্য মাস্টারকার্ড সাপোর্টেড এটিএম এ ১৫ টাকা চার্জ কাটবে।  
অ্যাকোয়া কার্ড এর সীমাবদ্ধতা:
প্রতিদিনের ম্যাক্সিমাম রিচার্জ/রিলোডের লিমিট ১,০০,০০০ টাকা (ব্রাঞ্চ) এবং ২০,০০০ (ই.বি.এল ড্রপবক্স বা ইন্টারনেট ব্যাংকিং)। ২০,০০০ টাকা বা তার অধিক জমাদানের ক্ষেত্রে ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত ফরম ফিলাপ করে জমা দিতে হবে।প্রতিদিন পজ মেশিনের সাহায্যে ৪০,০০০ টাকা (৬বারে) বা ১,২৫০ ডলার (১৫ বারে) কেনাকাটার সুযোগ, এটিএম মেশিনের সাহায্যে ৫০,০০০ টাকা (৬বারে) বা ১,২৫০ ডলার (১০ বারে) উত্তোলনের সুযোগ, ইকমার্স বা অনলাইনে ৪০,০০০ টাকা (৪বারে) বা ১,২৫০ ডলার (৮ বারে) ব্যবহারের সুযোগ। প্রতি ট্রাঞ্জেকশন সর্বোচ্চ ৩০০ ডলার।মিনিমাম ৫০ ইউ.এস.ডি. রিলোড/রিচার্জ করতে হবে।

আপনি প্রতিদিন একবারেও ৫০০০০ সমপরিমাণ টাকা তুলতে পারবেন আবার ৬ বারেও তুলতে পারবেন।   

কার্ডটি নেওয়ার প্রসেস

প্রথমে উপরোক্ত ডকুমেন্টগুলো নিয়ে নিকটতম যেকোনো ইবিএল ব্রাঞ্চে যান। ডলার ব্যাবহারের জন্য পাসপোর্টটি ও নিয়ে যান। পাসপোর্ট না নিয়ে গেলে এই কার্ড দিয়ে আপনি কোনো ইন্টারন্যাশনাল লেনদেন করতে পারবেন না। ব্যাংকে গিয়ে যে কাউকে বলুন যে আপনি আকুয়া কার্ডটি নিবেন। তারাই আপনাকে সঠিক যায়গায় পাঠিয়ে দিবে। অফিসারকে বলুন আপনি ইন্টারন্যাশনাল লেনদেন করতে চান৷ তাহলে উনিই আপনার পাসপোর্ট এ ডলার এন্ড্রোসমেন্ট করে দিবেন। এবং একটি ফর্ম ফিল আপের জন্য দিবেন। ফর্ম ফি আপ হয়ে গেলে আপনি সাথে সাথে কার্ডটি পেয়ে যাবেন।(আমার সময় আমি সাথে সাথে কার্ড পাইনি। আমাকে ৭ দিন পরে এসে নিয়ে যেতে হয়েছে)। এবং তখনই টাকা জমা দিতে পারবেন। তবে কার্ডটি ব্যবহার করার জন্য কার্ডটি একটিভ হওয়া পর্যন্ত আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে। সাধারণত ২-৩ কর্মদিবস এর মধ্যেই কার্ড একটিভ হয়ে যায়। আপনি তাদের হেল্পলাইন নাম্বারে কল করে যানতে পারবেন আপনার কার্ড একটিভ হয়েছে কি না। এবার আপনার কার্ডটি সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত অনলাইনে কেনাকাটার / বিল পে / সোশ্যাল মার্কেটিং এর জন্য।

আকুয়া কার্ড এর খরচঃ

কার্ডের জন্য আবেদনের সময় ৫৭৫ টাকা প্রদান করতে হবে যা প্রথম ৩ বছরের বাৎসরিক চার্জ হিসেবে ধরা হবে। বিডিটি কে ইউ.এস.ডি. তে কনভার্টের সময় ফ্লাট রেট / সমতা নীতি অনুযায়ী ডলারের রেট নির্ধারণ হবে।প্রতি ৩বছর পর পর কার্ডটি রিনিউ করতে হবে যার জন্য মাত্র ৫৭৫ টাকা প্রদান করতে হবে।
এ.টি.এম থেকে বিডিটি উইথড্রয়াল চার্জ; ই.বি.এল. এ.টি.এম ফ্রী, মাস্টারকার্ড সাপোর্টেড এ.টি.এম ২৫ টাকা + ১৫% ভ্যাট, এন.পি.এস.বি. সাপোর্টেড এ.টি.এম ১৫ টাকা + ১৫% ভ্যাট। (আভ্যন্তরীন)

২.৮৮ডলার (আন্তর্জাতিক) ভ্যাট সহ  
কার্ড রিপ্লেসমেন্ট ফি ৫৭৫ টাকা
ট্রাঞ্জেকশন অ্যালার্ট ২৩০ টাকা
পিন রিপ্লেসমেন্ট ফি ৫৭৫ টাকা

আরো পড়ুনঃ
ভারতীয় ট্যুরিস্ট ভিসা আবেদন কিভাবে করবেন।

স্বল্প খরচে ঘুরে আসুন মেঘালয় থেকে (শিলং-চেরাপুঞ্জি ভ্রমন)

FAQ of ebl aqua mastercard

  কার্ডটির কি কোনো Hidden চার্জ আছে?

   ~না এই কার্ডের কোনো Hidden চার্জ নেই। তবে এস এম এস চার্জ বছরে ২০০ টাকার মতো।

কার্ডটির সাথে কি আমাকে ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার দেওয়া হবে?
   ~না। এটি একটি প্রিপেইড কার্ড। এর সাথে ব্যাংক একাউন্ট এর কোনো সম্পর্ক নেই।

আমার পাসপোর্ট নেই। আমি কি এই কার্ডটি নিতে পারব?
   ~হ্যা। পারবেন। তবে শুধু মাত্র বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবহার করতে পারবেন।

কার্ডটিতে আমি কত ডলার লোড করতে পারব?
   ~বছরে সার্কভূক্ত দেশের জন্য ৫০০০ ডলার এবং নন সার্কভূক্ত দেশের জন্য ৭০০০ ডলার আপনি লোড এবং খরচ করতে পারবেন। তবে কার্ডটি নেওয়ার সময়ই বেশি টাকা এন্ড্রুসমেন্ট করে রাখুন। এতে আপনি কোনো সময় বিদেশ ভ্রমন করলে বেশি টাকা নিয়ে যেতে পারবেন। ধরুন আপনি ৫০০ ডলার এন্ডোসমেন্ট করলেন। তাহলে ৫০০ ডলারের বেশী টাকা লোড করতে পারবেন না। কিন্তু ২০০০ ডলার এন্ডোসমেন্ট করলে আপনি সহজেই ১২০০-১৩০০ ডলার বা আপনার প্রয়োজন মতো ডলার লোড করতে পারবেন। তাই সবসময় একটু বেশি ডলারই এন্ড্রোসমেন্ট করে রাখুন।

আমি ২০০০ ডলার এন্ডোসমেন্ট করিয়ে ২০০ ডলার কি লোড করতে পারব?
   ~ অবশ্যই পারবেন

ফেসবুকের পেজ প্রমুট করা যাবে?
   ~করা যাবে।

আলি এক্সপ্রেস বা আমাজন থেকে পন্য কিনতে পারব?
   ~অবশ্যই

 ডলার প্রতি কত টাকা দিয়ে লোড করতে হবে।
   ~এটা প্রতিদিন ব্যংকে আপডেট হয়। আপনি যে দিন ডলার লোড করবেন সেই দিনের রেট অনুযায়ী ডলার লোড হবে।

ব্যালান্স কিভাবে চেক করব?
   ~ব্যালেন্স চেক করার জন্য আপনাকে হেল্প লাইন নাম্বারে কল করে জেনে নিতে হবে।

   বর্তমানে EBL ইমেইল অটিপি চালু করেছে। ফলে আপনি দেশের বাইরে থাকাকালীন কিছু কেনার প্রয়োজন থাকলে ইমেইলের মাধ্যমে তাদের অটিপি পেতে পারেন। বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আর কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।


Comments

Post a Comment