পাতায়া, থাইল্যান্ড

পাতায়াঃ

"ভালো লোকেরা স্বর্গে যায়, আর খারাপ লোকেরা যায় পাতায়ায়।" 

উপরের এই কথাটির সাথে আর যারাই একমত থাকুক আমি একমত হবো না। গুগলে দেখলাম প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ পাতায়ায় বেড়াতে যায়। তারমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ হাজারের বেশি লোক পাতায়ায় প্রবেশ করে। তাদের সবার উদ্দ্যেশ্যই কি এক থাকে? অবশ্যই না। পাতায়ায় দেখার অনেক কিছুই আছে। সম্পূর্ণ এক ভিন্ন জগতের সাথে পরিচিত হতে হলে আপনাকে অবশ্যই পাতায়ায় যেতে হবে। পাতায়াকে সারাদিন থাইল্যান্ডের আর কয়টা যায়গার মতো লাগলেও রাতে পাতায়া জেগে উঠে। চারিদিকে বার, ক্লাব, পাবের হৈ হট্টগোল দেখে মনেই হবে না আপনি এশিয়ায় আছেন। কে বলেছে সেইসব বারে ঢুকলে শুধু মদই খেতে হয়? কেনো? সফট ড্রিংকস পাওয়া যায় না? পাতায়াতে প্রতিদিন ঢুকা ৩৫ হাজার মানুষ কি শুধু খারাপ কাজই করে? আসলে না। একজন ট্রাভেলার হতে হলে যতটা পারেন নিজের চোখ দিয়ে দেখে নিবেন। নিজে ভালো তো দুনিয়া ভালো। আর যাই হোক আমি কখনোই পেইড সেক্সকে ভালো চোখে দেখি না। একটা মেয়েকে যদি আপনি আপনার পুরুষত্ব দিয়ে যদি বাধতে না পারেন তাহলে টাকা দেখিয়ে তার সাথে বিছানায় যাওয়াটা শুধু পৌরষত্বহীন মানুষদেরই মানায়। তাই নিজের পুরুষত্ব দেখিয়ে কাউকে বিছানায় নিয়ে যেতে পারলে যেয়েন। না হলে টাকার বিনিময়ে এসব করিয়েন না। এটা ভালো দেখায় না। যাই হোক আপনার একটা যায়গায় যাওয়ার অনিচ্ছা থাকলে তো আর আপনাকে জোর করা যায় না। তাই যেহেতু আপনি এই পোস্ট পড়ছেন তাই ধরে নিচ্ছি আপনার সেখানে যাওয়ার ইচ্ছা আছে। অতএব কথা না বড়িয়ে দেখে নেই নিভাবে সেখানে যাওয়া যায়।

কিভাবে যাবেন

ব্যাংকক থেকে বাসে করে খুব সহজেই সেখানে যাওয়া যায়। এজন্য আপনাকে ব্যাংককের এয়ারপোর্টে নেমে সেখান থেকেই পাতায়ার বাস টিকেট কেটে নিতে হবে। 
বাংলাদেশ থেকে অনেক সহজেই ব্যাংকক যাওয়া যায়। তাই থাইল্যান্ড ট্যুরের সমস্ত প্লান পড়তে হলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

কি কি দেখবেন

Senctuary Of Truth: এটি কাঠের তৈরী একটা বুদ্ধ মন্দির। কাঠ দিয়ে যে এতো সুন্দর কোনো স্থাপত্য নির্মান করা সম্ভব তা সেটি না দেখলে বুঝা সম্ভব না। মন্দিরটির চূড়া ১০৫ মিটার উচু। পাতায়ার সবথেকে পপুলার প্লেস হচ্ছে এটি।


জমেতিন বিচঃ এটি পায়াতার একটি সি বিচ। ওয়াটার এক্টিভিটিস এর জন্য পপুলার। ৬ কিমি লম্বা এই বিচে ট্যুরিস্টের আনাগোনা থাকে। 

মিনি সিয়ামঃ নানা ধরনের পৃথিবীখ্যাত নিদর্শনের জুনিয়র ভার্শন দেখতে হলে এখানে চলে আসতে পারেন। 

আর্ট ইন প্যারাডাইসঃ এটি ৩ডি মিউজিয়াম। কিন্তু সম্পূর্ণটা চিত্রকর্ম নিয়ে এই মিউজিয়ামটা তৈরি। তাই এর নাম আর্ট ইন প্যারাডাইস। 

পাতায়া বিচঃ এটাও পাতায়ার বিচ। 

ওয়াকিং স্ট্রিটঃ ৭০০ মিটার লম্বা এর রাস্তাকে ঘিরেই যত বিতর্ক ও সারা বিশ্বের সব ট্যুরিস্টদের আকর্ষন। এটি মূলত সারা বিশ্বের মধ্যে সবচাইতে বড় রেড লাইট এরিয়া। ওয়াকিং স্ট্রীট সারাদিন আর দশটা রাস্তার মতোই থাকে। রাতে তা পরিনত হয় নাইটক্লাব, পাব, ড্যান্সবার, স্পা/ম্যাসাজ সেন্টারে। নিয়ন বাতির আলোয় আলোকিত হয়ে উঠে এই রাস্তাটা। প্রত্যেক ক্লাবের সামনে মেয়েরা হাতে তাদের ক্লাবের মূল্যতালিকা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। সারাটা রাত এই করেই চলে। ভোর হওয়ার সাথে সাথে আবার সবকিছু মিলিয়ে যায়। তাই এই নাইটলাইফ এর স্বর্গরাজ্যে একটা রাত না কাটালে অনেক কিছুই দেখার বাকি থেকে যায়৷


পাতায়া নিয়ে আরো একটা লেখা পড়েছিলাম যা আমাকে সত্যিই অন্যান্য দেশের কালচার সম্পর্কে জানতে অনেক সহায়তা করেছিল। আমি সবাইকেই অনুরোধ করবো হাতে সময় থাকলে লেখাটা পড়ে নিতে।
প্রশ্নঃ নাইট ক্লাবে কী হয় তার বিবরন কি দিতে পারেন?

কিছু টিপসঃ


  • পাতায়ায় স্কুটার ভাড়া নেওয়া যায়। সেটা নিয়ে ঘুরাই অনেক সেফ আর পকেট ফ্রেন্ডলি। 
  • পাতায়ায় এশিয়ার সবথেকে বড় ওয়াটার পার্কটি অবস্থিত। নাম Ramayana Water park। হাতে কিছু টাকা থাকলে সেটা দেখে আসতে পারেন। 
  • পাতায়ায় একা গেলে কোনো পার্টি হোস্টেলে থাকতে পারেন। এসব হোস্টেলে ফ্রেন্ডের অভাব হয় না। 
আরো পড়ুনঃ

Comments